চতুর্থ পাঠ

বিনিপিসি, বামি আর দিদি ঐ দিকে আছে। ঐ যে তিনজনে ঘাটে যায়।

 

বামি ঐ ঘটি নিয়ে যায়। সে মাটি নিয়ে নিজে ঘটি মাজে। রানীদিদি যায় না। রানীদিদি ঘরে। তার যে তিনদিন কাশি। তার কাছে আছে মা, মাসি আর কিনি।

 

চলো ভাই নীলু। এই তালবন দিয়ে পথ। তার পরে তিলক্ষেত। তার পরে তিসিক্ষেত। তার পর দীঘি। জল খুব নীল। ধারে ধারে কাদা। জলে আলো ঝিলিমিলি করে। বক মিটি মিটি চায় আর মাছ ধরে।


ঐ যে বামি ঘটি নিয়ে বাড়ি ফিরে যায়। ভাই, ঘড়ি আছে কি? দেখি। ছ’টা যে বাজে, আর দেরি নয়। এইবার আমি বাড়ি যাই। তুমি এস পিছে পিছে। পাখী খাবে, দেখ এসে।


এ কী পাখী? এ যে টিয়ে পাখী। ও পাখী কি কিছু কথা বলে? কী কথা বলে? ও বলে রাম রাম হরি হরি। ও কী খায়? ও খায় দানা। রানীদিদি ওর বাটি ভ’রে আনে দানা। বুড়ী দাসী আনে জল।

 

পাখী কি ওড়ে?

 

না, পাখী ওড়ে না, ওর পায়ে বেড়ি।


ও আগে ছিল বনে। বনে নদী ছিল, ও নিজে গিয়ে জল খেত।


দীনু এই পাখী পোষে।


                               ছায়ার ঘোমটা মুখে টানি

                               আছে আমাদের পাড়াখানি।

                               দীঘি তার মাঝখানটিতে,

                               তালবন তারি চারিভিতে।

                               বাঁকা এক সরু গলি বেয়ে

                               জল নিতে আসে যত মেয়ে।

                               বাঁশগাছ ঝুঁকে ঝুঁকে পড়ে,

                               ঝুরু ঝুরু পাতাগুলি নড়ে।

                               পথের ধারেতে একখানে

                               হরিমুদী বসেছে দোকানে।

                               চাল ডাল বেচে তেল নুন,

                               খয়ের সুপারি বেচে চুন,

                              ঢেঁকি পেতে ধান ভানে বুড়ী,

                               খোলা পেতে ভাজে খই মুড়ি।

                               বিধু গয়লানী মায়ে পোয়

                               সকাল বেলায় গোরু দোয়।

                               আঙিনায় কানাই বলাই

                               রাশি করে সরিষা কলাই।

                               বড়বউ মেজবউ মিলে

                               ঘুঁটে দেয় ঘরের পাঁচিলে।


                                               —