পঞ্চম পাঠ


চুপ ক’রে ব’সে ঘুম পায়। চলো, ঘুরে আসি। ফুল তুলে আনি।


আজ খুব শীত। কচুপাতা থেকে টুপ্‌ টুপ্‌ ক’রে হিম পড়ে। ঘাস ভিজে। পা ভিজে যায়। দুখী বুড়ী উনুন-ধারে উবু হয়ে ব’সে আগুন পোহায় আর গুন্‌ গুন্‌ গান গায়।


গুপী টুপী খুলে শাল মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে। ওকে চুপি চুপি ডেকে আনি। ওকে নিয়ে যাব কুলবনে। কুল পেড়ে খাব। কুলগাছে টুনটুনি বাসা ক’রে আছে। তাকে কিছু বলিনে।


আজ বুধবার, ছুটি। নুটু তাই খুব খুসি। সেও যাবে কুলবনে। কিছু মুড়ি নেব আর নুন। চড়ি-ভাতি হবে। ঝুড়ি নিতে হবে। তাতে কুল ভ’রে নিয়ে বাড়ি যাব। উমা খুসি হবে। ঊষা খুসি হবে। বেলা হলো। মাঠ ধূ ধূ করে। থেকে থেকে হূ হূ হাওয়া বয়। দূরে ধুলো ওড়ে। চুনি মালী কুয়ো থেকে জল তোলে আর ঘুঘু ডাকে ঘু ঘু।





                       আমাদের ছোটো নদী চলে বাঁকে বাঁকে,


                       বৈশাখ মাসে তার হাঁটুজল থাকে।


                       পার হয়ে যায় গোরু,পার হয় গাড়ি,


                       দুই ধার উঁচু তার,ঢালু তার পাড়ি।


                       চিক্‌চিক্‌ করে বালি,কোথা নাই কাদা,


                       এক ধারে কাশবন ফুলে ফুলে শাদা।


                       কিচিমিচি করে সেথা শালিখের ঝাঁক,


                       রাতে ওঠে থেকে থেকে শেয়ালের হাঁক।


                       আর-পারে আমবন তালবন চলে,


                       গাঁয়ের বামুনপাড়া তারি ছায়াতলে।


                       তীরে তীরে ছেলেমেয়ে নাহিবার কালে


                       গামছায় জল ভরি গায়ে তারা ঢালে।


                       সকালে বিকালে কভু-নাওয়া হলে পরে


                       আঁচলে ছাঁকিয়া তারা ছোটো মাছ ধরে।


                       বালি দিয়ে মাজে থালা, ঘটিগুলি মাজে,


                       বধুরা কাপড় কেচে যায় গৃহকাজে।


                       আষাঢ়ে বাদল নামে,নদী ভর-ভর—


                       মাতিয়া ছুটিয়া চলে ধারা খরতর।


                       মহাবেগে কলকল কোলাহল ওঠে,


                       ঘোলাজলে পাকগুলি ঘুরে ঘুরে ছোটে।


                       দুই কূলে বনে বনে প’ড়ে যায় সাড়া,


                       বরষার উৎসবে জেগে ওঠে পাড়া।